arnoor

৫১ নম্বর মকতুব : 🔹 সহজ ভাষায়

                           ৫১ নম্বর মাকতুব                                  

এই চিঠিটিতে শায়েখ ফরিদ (রহ.)-কে ইসলামি শরীয়তের দাওয়াত প্রচার-প্রচারে উৎসাহিত করার বিষয়ে বলা হয়েছে।

(শেখ ফরিদ হচ্ছেন মুজাদ্দেদে আলফেসানী রহঃ’র একজন উঁচু পর্যায়ের মুরিদ/ছালেক। এই চিঠিতে শায়েখ তাঁর ছাত্র/ছালেককে উপদেশ দিচ্ছেন এবং বলছেন)

আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করি যেন আপনি, যিনি একজন বড় ব্যক্তির যোগ্য সন্তান, তাঁর মাধ্যমে ইসলামের আলো, শরীয়তের বিধি-বিধান ও ইসলামের মূল নীতিগুলো প্রতিষ্ঠিত ও প্রচলিত হয়। আসল কাজ এটিই (অর্থাৎ ইসলামের দাওয়াতি কাজ করা/তাযকিয়াতুন নফসের দিকে ডাকা)—এই কাজ ছাড়া অন্য সব কিছুই মূল্যহীন। 


ইদানীং/বর্তমানে যেভাবে পথভ্রষ্টতা ছড়িয়ে পড়েছে, তা থেকে বাঁচার একমাত্র ভরসা হল নবীজির (সঃ) আহলে বাইতের নৌকা/তরণী (তাঁর বংশধর)। ঠিক যেন কেউ পানিতে পড়ে গেলে নৌকার সাহায্যে রক্ষা পাওয়া যায়, তা ঠিক তেমনি।


নবীজী (সঃ) বলেছেন, “আমার আহলে বাইত (পরিবারের সদস্যরা) নূহ (আঃ)-এর নৌকার মতো। যারা এতে উঠবে (অর্থাৎ অনুসরণ করবে), তারা নাজাত পাবে। আর যারা দূরে থাকবে, তারা ধ্বংস হয়ে যাবে।”


আপনার উঁচু মন-মানসিকতা যেন এই সৌভাগ্য অর্জনের দিকেই মনোযোগ দেয়—যাতে আপনি এই আহলে বাইতের সঙ্গ লাভ করে সত্য পথের অনুসারী হতে পারেন।

আল্লাহর দয়ায় আপনার মধ্যে সম্মান, পুণ্য, শ্রেষ্ঠত্ব ও সামাজিক মর্যাদা—সবই আছে।

এর সঙ্গে যদি আপনি ইসলাম প্রচারের কাজও করেন, তাহলে আপনি সকলের মধ্যে অগ্রগামী বা নেতৃস্থানীয় হয়ে উঠবেন।

এই দরবেশ (চিঠির লেখক/মোজাদ্দেদ আলফেসানী) শুধু ইসলামের সত্য পথ প্রচারের উদ্দেশ্যেই এসব আলোচনা করে আপনাকে উৎসাহ দিচ্ছেন।

দিল্লিতে রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। মা সাহেবা একটু দেরি করতে চেয়েছেন, তাই আমরা কোরআন শরীফের শেষ পর্যন্ত তেলাওয়াত ও শ্রবণের জন্য অপেক্ষা করেছি। বাকি আল্লাহর ইচ্ছা। আপনার জন্য দুনিয়া ও আখিরাত—উভয়ের কল্যাণ কামনা করি।

(চিঠি এখানে শেষ)

          — সহজ ভাষায় অনুবাদ, 

নকশবন্দি সুফি সেন্টার, জামতলা, চাষাড়া, নারায়ণগঞ্জ।

+88 01841674774


শায়েখ ফারিদ ছিলেন মুজাদ্দেদে আলফে ছানী (রহ.)-এর একজন অত্যন্ত প্রিয়, নিষ্ঠাবান, ও আধ্যাত্মিক অগ্রগামী শিষ্য (مريد صادق)। তিনি শুধু একজন সাধারণ মুরীদ ছিলেন না, বরং এমন একজন শিষ্য ছিলেন যিনি আত্মশুদ্ধি ও রুহানিয়াতের পথে গভীরভাবে অগ্রসর ছিলেন।

🔹 শায়েখ ফরিদের বৈশিষ্ট্য ও অবস্থান:

  1. আত্মশুদ্ধির আগ্রহী সাধক
    তিনি নিজের নফস ও হৃদয়ের পরিশুদ্ধি চাচ্ছিলেন। মুজাদ্দেদে আলফে সানী (রহ.) তাঁর অনেক চিঠিতে তাঁকে আত্মশুদ্ধির ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন, যা বোঝায় যে তিনি সেই পথে ছিলেন।
  2. উচ্চ রুহানিয়াতের যোগ্য ছিলেন
    তাঁর রুহানিয়াত এমন অবস্থায় পৌঁছেছিল যে, মুজাদ্দেদে আলফে সানী (রহ.) তাঁকে হাল বা কাশফের বিষয় বোঝাতেন—যা সাধারণ মুরীদদের ক্ষেত্রে করা হয় না।
  3. সত্যনিষ্ঠ ও অনুসরণকারী শিষ্য
    তিনি তাঁর মুরশিদের কথা মেনে চলতেন, তাঁর কাছ থেকে আত্মিক ও ইলমি ফায়দা গ্রহণ করতেন। তাঁর প্রতি চিঠির ভাষা থেকে বোঝা যায়, তিনি পরিশ্রমী, বিনয়ী এবং অনুসারী ছিলেন।
  4. পরামর্শপ্রার্থী ও প্রশ্নকারী
    বিভিন্ন রুহানী অবস্থা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি তাঁর শায়েখের কাছে প্রশ্ন করতেন, আর মুজাদ্দেদে আলফে সানী (রহ.) খুব যত্নসহকারে উত্তর দিতেন। এটা দেখায় যে তিনি একজন সচেতন ও চিন্তাশীল মুরীদ ছিলেন।

🌿 সংক্ষেপে:

✅ শায়েখ ফারিদ ছিলেন একজন
– আন্তরিক,
– অনুগত,
– আত্মশুদ্ধি ও আধ্যাত্মিক উন্নতির পথে সক্রিয় শিষ্য।
✅ তিনি মুজাদ্দেদে আলফে সানী (রহ.)-এর বিশ্বস্ত এবং প্রিয় মুরীদদের একজন ছিলেন।
✅ তাঁর রুহানিয়াতের এমন স্তর ছিল যে, তাঁর সাথে কাশফ, ফানা-বাকা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *