
(বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের নির্ধারিত সময়সূচির অনুসরণে)
আলোকিত এই নামাজ, নামাজ, সাহরি ও ইফতারের স্থায়ী সময়সূচি মরহুম হযরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ আমিমুল ইহসান মুজাদ্দেদী বরকতি (রহঃ) কর্তৃক রচিত ও সংকলিত, যিনি ছিলেন একজন বিদ্বান আলেম, ফিকহ ও ইবাদতের বিষয়ে বিশদ জ্ঞানসম্পন্ন একজন নির্ভরযোগ্য ইসলামী চিন্তাবিদ।














✅ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন:
সূর্যোদয়ের পর কত মিনিট পরে নামায পড়া যাবে? ১১-১৫ মিনিট পর পড়লে কি জায়েয হবে?
🟨 সারসংক্ষেপে উত্তর:
ফিকহি দৃষ্টিকোণ থেকে ১৫ মিনিট পর নামায পড়া “জায়েয” (যথার্থ), তবে সতর্কতা ও নিরাপত্তার জন্য ২০–২৫ মিনিট অপেক্ষা করাই উত্তম ও অধিক নিরাপদ।
📚 তথ্যসূত্র ও বিশ্লেষণ:
১. নিষিদ্ধ সময় সম্পর্কে হাদীস:
নবী করীম ﷺ বলেন:
📖
عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ: ثَلاَثُ سَاعَاتٍ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ يَنْهَانَا أَنْ نُصَلِّيَ فِيهِنَّ أَوْ أَنْ نَقْبُرَ فِيهِنَّ مَوْتَانَا: حِينَ تَطْلُعُ الشَّمْسُ بَازِغَةً، وَحِينَ يَقُومُ قَائِمُ الظَّهِيرَةِ، وَحِينَ تَضَيَّفُ الشَّمْسُ لِلْغُرُوبِ.
📘 বাংলা অনুবাদ:
উকবা ইবন আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
“তিনটি সময় ছিল যখন আল্লাহর রাসূল ﷺ আমাদের নামায আদায় করতে এবং আমাদের মৃতদের কবরস্থ করতে নিষেধ করেছেন—
১. যখন সূর্য উদিত হয়ে ওঠে (অর্থাৎ সূর্য উঠার সময়),
২. যখন সূর্য মধ্য আকাশে থাকে (মধ্যাহ্ন),
৩. যখন সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় ধীরে ধীরে হেলে পড়ে (সূর্যাস্তের পূর্ব মুহূর্ত)।”
📚 উৎস:
📖 সহিহ মুসলিম,
হাদীস নম্বর: 831,
বই: কিতাবুস সালাত (নামায সংক্রান্ত অধ্যায়)
এই “উঠার সময়” বলতে বোঝায়, সূর্য দিগন্ত থেকে পুরোপুরি উঠার পর যতক্ষণ না তা দৃষ্টিগোচরভাবে উপরের দিকে ওঠে, সেই সময় পর্যন্ত।
উলামায়ে কেরামের ব্যাখ্যা:
বিভিন্ন ফিকহি কিতাব ও আলেমগণের ব্যাখ্যায় সূর্যোদয়ের পর নিষিদ্ধ সময়ের পরিমাণ হিসেবে তিনটি মত দেখা যায়:
মতামত সময় উৎস
ন্যূনতম ১১–১৫ মিনিট কিছু ফিকহি উৎসে (যেমন: হেদায়া, ফাতাওয়া)
সাধারণ মত অনুযায়ী: ২০ মিনিট (অধিকাংশ আলেমের মতে)
সর্বোত্তম নিরাপত্তা সময়: ২৩-২৫ মিনিট।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, সৌদী আরবের মান, ভারতীয় মুফতিগণ
🧭 গবেষণা অনুযায়ী:
✔ ১১–১৫ মিনিট পর নামায পড়লে অনেক আলেমের মতে তা “জায়েয”, কিন্তু এটা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যেতে পারে।
✔ তাই, যেহেতু নামায একটি ফরজ ইবাদত এবং এর সময় নিয়ে শিথিলতা উচিত নয়। তাই এক্ষেত্রে কমপক্ষে ২০ মিনিট অপেক্ষা করাই উত্তম।
🔔 কেন সতর্কতা দরকার?
জ্যোতির্বিজ্ঞান অনুযায়ী, সূর্যোদয়ের সময় অল্প কিছু মিনিটেও অনেক পরিবর্তন ঘটে।
সব অঞ্চলে সূর্যের গতি একরকম নয়।
ইসলামী ফাউন্ডেশন সময়সূচীতে সর্বোচ্চ সতর্কতা হিসেবে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
শেষ কথা
১১–১৫ মিনিট পর নামায পড়লে তা সহীহ হওয়ার সম্ভাবনা আছে, তবে ২০–২৫ মিনিট অপেক্ষা করাই অধিক নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য এবং উত্তম।
🕌 নির্ধারিত সময়ে নামায আদায় করা কেন জরুরি?
📖 ১. কুরআনের স্পষ্ট আদেশ:
إِنَّ الصَّلَاةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتَابًا مَّوْقُوتًا
অনুবাদ:
নিশ্চয়ই নামায মুমিনদের উপর নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ফরজ করা হয়েছে।
📚 সূরা আন-নিসা (4:103)
🔹 এই আয়াত দ্বারা প্রতীয়মান হয়—নামায কেবল পড়লেই হবে না, বরং নির্ধারিত সময়ে পড়তে হবে। সময়ের বাইরে নামায পড়া হলে তা গুনাহের কারণ হতে পারে এবং ফজিলত থেকে বঞ্চিত হতে হয়।
📘 ২. হাদীসের নির্দেশনা:
📌 হাদীস-১:
سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ: أَيُّ الْعَمَلِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: الصَّلَاةُ عَلَى وَقْتِهَا
অনুবাদ:
আমি আল্লাহর রাসূল ﷺ-কে জিজ্ঞেস করলাম, “সর্বোত্তম কাজ কোনটি?”
তিনি বললেন, “নামায নির্ধারিত সময়ে আদায় করা।”
📚 সহিহ বুখারী ও মুসলিম
📌 হাদীস-২:
مَنْ حَافَظَ عَلَى الصَّلَوَاتِ كَانَتْ لَهُ نُورًا وَبُرْهَانًا وَنَجَاةً يَوْمَ الْقِيَامَةِ
অনুবাদ:
যে ব্যক্তি নামাযের হেফাজত করে (অর্থাৎ সময়মতো পড়ে), তা কিয়ামতের দিন তার জন্য হবে নূর, প্রমাণ এবং মুক্তির উপায়।
📚 মুসনাদে আহমদ
⏰ সময়ের গুরুত্ব:
নামাযের নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করেছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। এতে রয়েছে—
- 📌 আল্লাহর হুকুম মান্য করা,
- 📌 ব্যক্তিগত শৃঙ্খলা ও সময় ব্যবস্থাপনার প্রশিক্ষণ,
- 📌 সমাজে ইসলামি পরিবেশ বজায় রাখা,
- 📌 জীবনকে নিয়মে বাঁধা এবং গোনাহ থেকে বাঁচা।
✅ নির্ধারিত সময়ে নামায আদায়ের উপকারিতা:
বিষয় ও ব্যাখ্যা
🕋 আল্লাহর সন্তুষ্টি সময়মতো নামায আদায়কারী ব্যক্তি আল্লাহর প্রিয় বান্দা
🌟 ফজিলত ও সাওয়াব সময়মতো পড়লে নামাযের পূর্ণ ফজিলত লাভ হয়
🧭 সময় সচেতনতা জীবন হয় সুশৃঙ্খল ও লক্ষ্যভিত্তিক
🛡️ গুনাহ থেকে বাঁচা দেরি করে পড়লে কাযা হয়, যা গুনাহের কাজ
🧘 আত্মিক প্রশান্তি নামায সময়মতো পড়লে হৃদয় শান্ত হয়
⚠️ দেরিতে নামায পড়ার ক্ষতি:
কাযা হলে গুনাহ হবে
সময়চ্যুত ইবাদতের ফজিলত পাওয়া যাবে না
গাফলতি ও অলসতার অভ্যাস গড়ে উঠে
কিয়ামতের দিন জবাবদিহির ভয়
🔹 নামায আল্লাহর ফরজ করা সবচেয়ে বড় ইবাদত। তাই শুধু পড়লেই হবে না, সময়মতো পড়া অপরিহার্য।
🔹 আল্লাহর নিকট নামায সময়মতো আদায়কারীই প্রিয়।
🔹 কুরআন ও হাদীস বারবার সময়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে।
🔹 নামাযের প্রতি যত্নশীল হলে জীবনের সকল কাজেই বরকত ও সফলতা আসে।
🕌 নিয়মিত যথাসময়ে নামাজ পড়ার ফজিলত (হাদীসভিত্তিক)
- নামাজ ইসলাম ধর্মের ভিত্তি ও স্তম্ভ — হাদীসে এসেছে, নামাজ হলো ইসলামের খুঁটি। যে তা প্রতিষ্ঠা করে, সে দ্বীন কায়েম করে। আর যে তা ত্যাগ করে, সে দ্বীন ধ্বংস করে। (তিরমিযী)
- নামায সময়মতো আদায় করা আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম কাজ — হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, “আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ–কে জিজ্ঞাসা করলাম, কোন কাজ সবচেয়ে উত্তম?” তিনি বললেন, “নির্ধারিত সময়ে নামায আদায় করা।” (বুখারী, মুসলিম)
- নামাজ ঈমান ও কুফরের মাঝে পার্থক্যকারী আমল — রাসূল ﷺ বলেন, “আমাদের ও কাফিরদের মাঝে পার্থক্য হলো নামায।” (তিরমিযী)
- নামায ব্যক্তি চরিত্র ও নৈতিকতা গঠন করে — নিয়মিত নামায মানুষকে অন্যায়, অশ্লীলতা, পাপ ও মন্দ কাজ থেকে দূরে রাখে। (সূরা আনকাবুত: ৪৫)
- নামায কিয়ামতের দিন আলো, দলিল ও মুক্তির উপায় হবে — রাসূল ﷺ বলেন, “নামায যার থাকবে, কিয়ামতের দিন তা তার জন্য হবে আলো, দলিল ও মুক্তির মাধ্যম।” (মুসনাদে আহমদ)
- নামায গোনাহ মোচনের মাধ্যম — পাঁচ ওয়াক্ত নামায একে অপরের মাঝে সংঘটিত ছোটখাটো গোনাহসমূহ মুছে দেয়। (মুসলিম)
- নামায পড়া কিয়ামতের জবাবদিহিতে সফলতার প্রথম শর্ত — হাদীসে এসেছে, “কিয়ামতের দিন বান্দার প্রথম হিসাব হবে নামায নিয়ে। যদি তা সঠিক হয়, বাকি সব সহজ হবে।” (তিরমিযী)
- নামাযের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য লাভ হয় — “সবর ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয়ই নামায কঠিন, কিন্তু তারা ছাড়া নয় যারা বিনয়ী।” (সূরা বাকারা: ৪৫)
- নিয়মিত নামায কবরের আযাব থেকে রক্ষা করে — যারা নামাযের প্রতি যত্নবান, কবরের আযাব তাদের ওপর সহজ হয় বা মাফ হয়ে যায়। (ইমাম হাকেম)
- নামায আত্মিক প্রশান্তি ও হৃদয়ের শীতলতা এনে দেয় — রাসূল ﷺ বলেন, “নামায আমার চোখের শীতলতা।” (নাসাঈ)
- নামায মৃত্যুর সময় ঈমান রক্ষার মাধ্যম — যারা জীবনে নামাযের অভ্যস্ত, মৃত্যুর সময়ও তারা আল্লাহর জিকির ও তাওহীদে অটল থাকে।
- নামায সময়ানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলার শিক্ষা দেয় — নামায সময়মতো পড়া ব্যক্তিকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে চলতে শেখায়।
- নামায পড়লে মুখমণ্ডল উজ্জ্বল হয় — যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ে, তাদের মুখ কিয়ামতের দিন আলো দিয়ে উদ্ভাসিত থাকবে। (আহমাদ)
- নামায জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করে — হাদীসে এসেছে, “যে নামায রক্ষা করবে, আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন।” (তাবরানী)
- নামাযে গাফলত কারীদের জন্য কঠিন শাস্তির হুঁশিয়ারি — “দুর্ভোগ সেসব নামাযকারীর জন্য, যারা নিজেদের নামাযে গাফেল।” (সূরা মা’উন: ৪-৫)
- নামায ফেরেশতাদের সাক্ষ্যযুক্ত আমল — ফজর ও আসরের নামাযের সময় ফেরেশতা বদল হয় এবং তারা বান্দার নামাজের গুণে সাক্ষী দেয়। (বুখারী)
- নামায মুমিনের শক্তি ও সাহসের উৎস — নামায মুমিনকে মনোবল, ধৈর্য ও আত্মবিশ্বাস জোগায়।
- নামায জান্নাতে রাসূলের সান্নিধ্য এনে দেয় — রাসূল ﷺ বলেন, “তোমরা বেশি সেজদা করো (নামাযে), জান্নাতে আমার সান্নিধ্য পাবে।” (মুসলিম)
- নামায ইবাদতের সেরা রূপ — রাসূল ﷺ বলেন, “নামায হলো ইবাদতের সর্বশ্রেষ্ঠ রূপ।” (তিরমিযী)
- নামায জীবনকে পবিত্র করে — নামায মানুষের অন্তর, মন, দেহ ও জীবনের কলুষতা দূর করে আত্মা শুদ্ধ করে।
- নামাযের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর সাথে সরাসরি কথা বলে — হাদীসে বলা হয়, সিজদায় বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী হয়। (মুসলিম)
- নামায জান্নাতের উপযুক্ত করে তোলে — যে ব্যক্তি সময়মতো নামায পড়ে, সে জান্নাতের উপযুক্ত বান্দা হিসেবে গড়ে ওঠে।
- নামায না পড়লে ইমান ধ্বংসের ঝুঁকি থাকে — রাসূল ﷺ বলেন, “নামায ছেড়ে দেওয়া কুফরের নিকটবর্তী।” (তিরমিযী)
- নামাযের গুরুত্ব বুঝলে তা হালকা মনে হয় না — মু’মিন কখনো নামাযকে ভার মনে করে না। বরং তা তার হৃদয়ের প্রশান্তির উৎস। (সূরা বাকারা)
- নামাযের দ্বারা গোনাহ ঝরে যায় — রাসূল ﷺ বলেন, “যেমন কেউ নদীতে পাঁচবার গোসল করে, তার ময়লা থাকে না; নামাযও গোনাহ ঝরিয়ে দেয়।” (বুখারী)
- নামায পড়ে পরিশুদ্ধ জীবন গঠন করা যায় — নামায মনের মধ্যে তাকওয়া সৃষ্টি করে যা জীবনের সব ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে।
- নামাযের মাধ্যমে দুনিয়ার বিপদ থেকেও রক্ষা পাওয়া যায় — অনেক হাদীসে এসেছে, বিপদের সময় নামায পড়া নবীদের অভ্যাস ছিল।
- নামায অটুট রাখলে অন্যান্য ইবাদতেরও হিফাজত হয় — যিনি নামায ঠিক রাখেন, অন্যান্য ইবাদতও সাধারণত ঠিকভাবে করেন।
- নামায মুমিনের পরিচয় ও আলাদা বৈশিষ্ট্য — নামায মুমিনদের শান ও অহংকার। এটি তাকে অমুসলিমদের থেকে আলাদা করে।
- নামায হচ্ছে জান্নাতে পৌঁছার সেতুবন্ধন — একমাত্র নামাযই এমন ইবাদত যা দুনিয়া থেকে শুরু করে কিয়ামত পর্যন্ত মুমিনকে জান্নাতের পথে ধরে রাখে।
🌿 তাযকিয়াতুন নফস গঠনে নামাযের গুরুত্ব — হাদীস ও কুরআনের আলোকে :
- নামায আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে গুনাহমুক্ত রাখে
→ আল্লাহ বলেন, “নামায মানুষকে অশ্লীলতা ও গোনাহ থেকে বিরত রাখে।” (সূরা আনকাবুত ২৯:৪৫)
নফসের প্রধান রোগ হলো গুনাহ ও খারাপ অভ্যাস, যা নামায দ্বারা নির্মূল হয়। - নামায আল্লাহর স্মরণ জাগিয়ে তোলে
→ “আমার স্মরণে নামায কায়েম কর।” (সূরা তোয়াহা ২০:১৪)
আল্লাহর স্মরণ আত্মাকে জাগিয়ে তোলে ও পাপ থেকে দূরে রাখে — যা তাযকিয়ার মূল কাজ। - নামায অন্তরকে নরম ও বিনয়ী করে তোলে
→ সেজদা মানুষকে অহংকার ও আত্মঅহঙ্কার থেকে মুক্ত করে, যা আত্মশুদ্ধির এক বড় বাধা। - নামায ধৈর্য ও তাকওয়ার প্রশিক্ষণ দেয়
→ “সবর ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য চাও।” (সূরা বাকারা ২:৪৫)
আত্মশুদ্ধিতে ধৈর্য ও আল্লাহভীতি (তাকওয়া) অপরিহার্য উপাদান। - নামায আত্মার প্রশান্তি ও হৃদয়ের স্থিতি দেয়
→ রাসূল ﷺ বলেন, “নামায আমার চোখের শীতলতা।” (নাসাঈ)
এই প্রশান্তিই আত্মাকে শুদ্ধ ও পরিশ্রান্ত করে তোলে। - নিয়মিত নামায নফসকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে
→ পাঁচ ওয়াক্ত নামায সময়ানুবর্তিতা শেখায়। নফস যখন নিয়ম মেনে চলে, তখন তা সহজেই সংশোধিত হয়। - নামায মানুষকে আল্লাহর সবচেয়ে নিকটে নিয়ে যায়
→ “সেজদার সময় বান্দা তার রবের সবচেয়ে নিকটবর্তী হয়।” (মুসলিম)
আত্মশুদ্ধির জন্য আল্লাহর নৈকট্য সবচেয়ে বড় শক্তি। - নামায রিয়া (প্রদর্শন) ও অহংকার দূর করে
→ নামাযে একান্তভাবে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো আত্মাকে খাঁটি করে এবং রিয়ার ব্যাধি দূর করে। - নামায বান্দাকে গাফিলত থেকে মুক্ত করে
→ যারা নিয়মিত নামায পড়ে, তারা আর নফসের ভুলে গাফেল থাকে না। গাফেলতা তাযকিয়ার বড় শত্রু। - নামায মনের ভেতরের অশান্তি ও হিংসা দূর করে
→ নিয়মিত নামাযে আত্মা আল্লাহর স্মরণে ব্যস্ত থাকায় হিংসা, বিদ্বেষ, হঠকারিতা দূর হয়। - নামায নফসের নিয়ন্ত্রণ শেখায়
→ বারবার সেজদা করা, শরীর-মনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা — এগুলো আত্মনিয়ন্ত্রণের চর্চা, যা তাযকিয়ার মূল। - নামায মানুষকে জবাবদিহির অনুভূতিতে অভ্যস্ত করে
→ প্রতিদিন ৫ বার আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো মানুষ নিজেকে আত্মসমালোচনায় অভ্যস্ত করে তোলে। - নামাযের মাধ্যমে বান্দা আত্মগর্বী না থেকে আত্মসমর্পণকারী হয়
→ নামাযে আমরা বলি “إياك نعبد” (আমরা শুধু তোমারই ইবাদত করি) — এই স্বীকৃতি আত্মাকে নম্র করে। - নামায নফসকে পবিত্র জীবনের দিকে পরিচালিত করে
→ প্রতিদিন আল্লাহর স্মরণে মন সংযত হয়, জীবনে হারাম থেকে দূরে থাকার শক্তি আসে। - নামায আত্মাকে আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমতের উপযোগী করে তোলে
→ নিয়মিত ইবাদতের মাধ্যমে আত্মা আল্লাহর নৈকট্যের উপযুক্ত হয়, যা আত্মশুদ্ধির সেরা পুরস্কার। - নামায আত্মাকে অন্যায় থেকে বিরত রাখে
→ যারা নামায পড়ে, তারা সহজে কাউকে ঠকায় না, গালি দেয় না, গিবত করে না — কারণ তাদের নফস নিয়ন্ত্রিত। - নামায সৎচরিত্রের ভিত্তি তৈরি করে
→ রাসূল ﷺ বলেন, “যার নামায তাকে মন্দ কাজ থেকে ফেরায় না, তার নামায কোনো কাজে আসবে না।” (তাবরানী) - নামায আত্মাকে পার্থিব মোহ থেকে আলাদা করে
→ নামায মানুষকে দুনিয়ার ব্যস্ততা থেকে সরিয়ে এনে আখিরাতমুখী করে তোলে। - নামায নফসের ভুল চিন্তা ও কু-প্রবৃত্তিকে শোধরায়
→ যারা ইলহাম বা খারাপ ওয়াসওয়াসা থেকে মুক্তি চায়, তাদের জন্য নামাযই হল একমাত্র উপায়। - নামায আল্লাহর ভালোবাসা অর্জনের সোপান
→ আত্মাকে সবচেয়ে সুন্দর অবস্থায় গড়তে হলে চাই আল্লাহর ভালোবাসা, আর তা অর্জিত হয় নামাযের মাধ্যমে।